ফ্যাশন শুধু পোশাকের মাধ্যমে নিজেকে উপস্থাপন করা নয়, বরং এটি একজনের ব্যক্তিত্ব এবং আত্মবিশ্বাসের প্রকাশ। জনপ্রিয় সেলিব্রিটিরা সবসময়ই আমাদের ফ্যাশন দুনিয়ায় বড় ভূমিকা পালন করে আসছেন। তাঁদের অনন্য স্টাইল, পোশাক নির্বাচন, এবং ট্রেন্ড সেটিং সবই আমাদের দৈনন্দিন ফ্যাশনের উপর প্রভাব ফেলে। এই ব্লগে আমরা কিছু জনপ্রিয় ফ্যাশন আইকনদের স্টাইল নিয়ে আলোচনা করবো, এবং কীভাবে আপনি তাদের ফ্যাশন লুক থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারেন তা শিখবেন।
বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী দীপিকা পাডুকোন তার এলিগেন্ট এবং মিনিমালিস্টিক ফ্যাশন সেন্সের জন্য পরিচিত। তার স্টাইল এমন যেখানে কমের মধ্যে বেশি প্রকাশ পায়। দীপিকা সাধারণত সলিড কালারের পোশাক, ক্লাসিক সিলুয়েট এবং হালকা গয়না পরিধান করেন, যা তাকে সবসময় এলিগ্যান্ট এবং গ্রেসফুল দেখায়।
কীভাবে স্টাইল করবেন:
দীপিকার স্টাইল অনুকরণ করতে হলে আপনি মিনিমালিস্টিক পোশাক বেছে নিতে পারেন। সাদা, কালো বা নিউট্রাল রঙের পোশাক এবং সুতির বা সিল্কের ম্যাটারিয়ালের শাড়ি কিংবা লং ড্রেস পরুন। হালকা মেকআপ এবং ছোট গয়না, যেমন ছোট স্টাড কানের দুল বা একটি স্লিক নেকলেস আপনার লুককে আরও ফিনিশিং দেবে।
রণবীর সিং বলিউডের এমন একজন তারকা, যিনি ফ্যাশনের ক্ষেত্রে কখনো পিছু হটেন না। তার বোল্ড, রঙিন এবং এক্সপেরিমেন্টাল ফ্যাশন স্টেটমেন্ট সবসময়ই আলোচনায় থাকে। রণবীরের স্টাইল হল এমন যেখানে উজ্জ্বল রং, চমকপ্রদ প্রিন্ট এবং ভিন্নধর্মী অ্যাকসেসরিজকে মিশিয়ে দারুণ এক ফিউশন তৈরি করা হয়।
কীভাবে স্টাইল করবেন:
আপনি যদি সাহসী এবং এক্সপেরিমেন্টাল স্টাইল পছন্দ করেন, তাহলে রণবীরের ফ্যাশন অনুসরণ করতে পারেন। উজ্জ্বল রঙের স্যুট, প্রিন্টেড ব্লেজার বা অফবিট শার্ট পরার চেষ্টা করুন। তার সঙ্গে ট্রেন্ডি স্নিকার্স বা স্টেটমেন্ট শেডস যোগ করে আপনি আরও সাহসী লুক পেতে পারেন।
বলিউডের আরেক জনপ্রিয় ফ্যাশন আইকন হলেন সোনম কাপুর। তার ফ্যাশন সেন্স তাকে বলিউডের ‘ফ্যাশনিস্তা’ তকমা এনে দিয়েছে। সোনমের স্টাইল হল হাই-ফ্যাশন এবং রেট্রো লুকের এক দারুণ মিশেল। সে প্রায়ই বিখ্যাত ডিজাইনারদের পোশাক পরেন এবং বিভিন্ন ফ্যাশন উইকে তাকে পাওয়া যায় সবচেয়ে ট্রেন্ডি লুক নিয়ে হাজির হতে।
কীভাবে স্টাইল করবেন:
সোনমের মতো স্টাইল পেতে হলে আপনি হাই-ফ্যাশনের সাথে রেট্রো ফ্লেভার যোগ করতে পারেন। রেট্রো প্রিন্টের পোশাক, ফ্লেয়ার প্যান্ট বা বোহো স্টাইলের ড্রেস বেছে নিন। তার সঙ্গে বড় গয়না, যেমন ওভারসাইজড ইয়াররিং বা স্টেটমেন্ট নেকলেস যোগ করুন। হালকা ও স্টাইলিশ হেয়ারস্টাইল আপনাকে সোনমের মতো ফ্যাশনেবল করে তুলবে।
হ্যারি স্টাইলস হলেন বর্তমানের অন্যতম ফ্যাশন আইকন, যিনি তার ভিন্নধর্মী এবং জেন্ডার-ফ্লুইড ফ্যাশন সেন্সের জন্য প্রশংসিত। তার ফ্যাশন চয়েসগুলি মূলধারার বাইরে গিয়ে সাহসী এবং ভিন্টেজ ইন্সপায়ার্ড। সে প্রায়শই সিকুইন জ্যাকেট, ফুলের প্রিন্ট এবং উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরিধান করে, যা ফ্যাশন জগতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
কীভাবে স্টাইল করবেন:
হ্যারির স্টাইল থেকে অনুপ্রেরণা নিতে হলে আপনি ভিন্টেজ লুক বেছে নিতে পারেন। উজ্জ্বল রঙের স্যুট, ফ্লোরাল প্রিন্ট শার্ট এবং লুজ ট্রাউজার বেছে নিন। পোশাকের সঙ্গে সাহসী গয়না যেমন বড় আংটি বা চোকার যোগ করে আপনার লুককে আরও ইউনিক করে তুলতে পারেন।
গিগি হাদিদ তার ক্যাজুয়াল অথচ ট্রেন্ডি লুকের জন্য ফ্যাশন দুনিয়ায় জনপ্রিয়। তার "মডেল-অফ-ডিউটি" লুক হল একটি স্বচ্ছন্দ ক্যাজুয়াল স্টাইল, যেখানে ডেনিম, হুডি এবং স্নিকার্স একসঙ্গে মিলে যায়। গিগির স্টাইল হল এমন যেখানে সহজে পরিধানযোগ্য পোশাকগুলিও দেখতে খুবই ফ্যাশনেবল এবং আরামদায়ক লাগে।
কীভাবে স্টাইল করবেন:
গিগির লুক পেতে হলে আপনাকে ক্যাজুয়াল অথচ ট্রেন্ডি পোশাক বেছে নিতে হবে। ডেনিম জ্যাকেট, হুডি, বেসিক টি-শার্ট এবং হাই-ওয়েস্টেড জিন্স পরুন। ফিনিশিং টাচ হিসেবে যোগ করতে পারেন স্নিকার্স এবং সানগ্লাস। আরামদায়ক পোশাকও যে ফ্যাশনেবল হতে পারে, তা গিগির স্টাইল থেকে শিখে নেওয়া যায়।
প্রিয়াঙ্কা চোপড়া হলেন একজন গ্লোবাল ফ্যাশন আইকন। তার রেড কার্পেট লুক সবসময়ই অত্যন্ত গ্ল্যামারাস এবং সাহসী। প্রিয়াঙ্কার স্টাইলের বৈশিষ্ট্য হল তিনি মডার্ন ট্রেন্ডের সঙ্গে ট্র্যাডিশনাল এলিমেন্ট মিশিয়ে এক অনন্য ফিউশন তৈরি করেন।
কীভাবে স্টাইল করবেন:
প্রিয়াঙ্কার রেড কার্পেট লুক থেকে অনুপ্রেরণা নিতে চাইলে সাহসী গাউন, স্টেটমেন্ট গয়না এবং সাহসী মেকআপ বেছে নিন। যদি আপনি কোনো ফর্মাল ইভেন্টে যান, তাহলে একটি লং গাউন বা মেটালিক ফিনিশের পোশাক পরুন। এর সঙ্গে সাহসী মেকআপ এবং এলিগ্যান্ট হেয়ারস্টাইল বেছে নিন, যা আপনাকে আরও গ্ল্যামারাস দেখাবে।
সেলিব্রিটিরা আমাদের ফ্যাশনের ক্ষেত্রে বড় রোল মডেল হিসেবে কাজ করেন। তাঁদের স্টাইলের মাধ্যমে আমরা আমাদের নিজের ফ্যাশন সেন্সকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারি। দীপিকা পাডুকোনের মিনিমালিস্টিক লুক থেকে শুরু করে রণবীর সিংয়ের বোল্ড এবং এক্সপেরিমেন্টাল স্টাইল পর্যন্ত, প্রত্যেকটি স্টাইলের মধ্যেই নিজস্বতা রয়েছে। তাই আপনার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানানসই ফ্যাশন স্টাইল বেছে নিন এবং নিজেকে ফ্যাশন জগতে আরও আত্মবিশ্বাসীভাবে উপস্থাপন করুন।